নিষ্প্রাণ হয়ে পড়া ম্যাচে প্রাণ ফিরিয়েছিল জাদেজা ও মহেন্দ্র সিং ধোনির অসাধারণ জুটি। কিন্তু দুর্দান্ত বোলিংয়ে ফিল্ডিংয়ে ভারতকে হতাশ করে কিউইরাই হাসল শেষ হাসি। ১৮ রানের জয়ে পা রাখল ফাইনালের মঞ্চে।
বারবার সেমি-ফাইনাল থেকে বাদ পড়ে একসময় সেমি-ফাইনালের দল হিসেবে পরিচিতি পেয়ে গিয়েছিল নিউ নিউজিল্যান্ড। ফাইনালের সঙ্গে আড়ি অবশেষে কেটে যায় গত বিশ্বকাপে। এবার তারা টানা দ্বিতীয়বার জায়গা করে নিল ফাইনালে।
রিজার্ভ ডেতে গড়ানো প্রথম সেমি-ফাইনালে ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ২৩৯ রান তোলে নিউ জিল্যান্ড। রস টেইলর ফিরলেন রান আউটে। শেষ দিকে সেভাবে ঝড় তুলতে পারলেন না আর কেউ। আগের দিনের স্কোরের সঙ্গে তাই খুব বেশি রান যোগ করতে পারেনি নিউ জিল্যান্ড।
বুধবার রিজার্ভ ডেতে ২৩ বলে তিন উইকেট হারিয়ে কিউরা যোগ করতে পেরেছে ২৮ রান। মঙ্গলবার বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হওয়ার আগে ৪৬.১ ওভারে তাদের রান ছিল ৫ উইকেটে ২১১।
উইকেটে ছিলেন থিতু ব্যাটসম্যান। কিন্তু নতুন দিনে তো চ্যালেঞ্জ আবার প্রথম থেকেই শুরুর মতো। সেখানেই থমকে গেছে নিউ জিল্যান্ড। ৬৭ রানে দিন শুরু করা টেইলর ৭৬ রানে ফিরেছেন রবীন্দ্র জাদেজার সরাসরি থ্রোয়ে। বাকিরা তেমন কিছু করতে পারেনি।
ভুবনেশ্বর কুমার ও জাসপ্রিত বুমরাহ দারুণ বোলিংয়ে এ দিনের প্রায় চার ওভারে চার এসেছে কেবল একটি।
এই দুই বোলার আগের দিন কিউইদের ভুগিয়েছিলেন নতুন বলেও। দুজনের আগুনে বোলিংয়ে ৭ ওভার শেষে নিউ জিল্যান্ডের রান ছিল ১০। বুমরাহর বলে হেনরি নিকোলসের ড্রাইভে অষ্টম ওভারে আসে ইনিংসের প্রথম বাউন্ডারি।
নতুন বলের দুই বোলারের স্পেল শেষে একটু স্বস্তি পায় নিউ জিল্যান্ড। নিকোলস ও উইলিয়ামসন আস্তে আস্তে রান বাড়াতে থাকেন। গড়ে ওঠে জুটি।
৮৯ বলে দুজনের ৬৮ রানের জুটি ভাঙে রবীন্দ্র জাদেজার দারুণ ডেলিভারিতে। ২৮ রান করে ব্যাট-প্যাডের ফাঁক গলে বোল্ড হন নিকোলস।
টেইলরের সঙ্গে মিলে এরপর উইলিয়ামসন গড়েছেন আরেকটি জুটি। তবে ভারতের আঁটসাঁট বোলিং ও উইকেটের মন্থরতা মিলিয়ে গতি খুব বাড়াতে পারছিলেন না তারা। ১৪তম ওভারের পর টানা ১৩ ওভারে আসেনি কোনো বাউন্ডারি।
১০২ বলে ৬৫ রানের জুটি শেষ হয় উইলিয়ামসনের বিদায়ে। ৯৫ বলে ৬৭ করে কিউই অধিনায়ক ক্যাচ দেন যুজবেন্দ্র চেহেলের থমকে আসা একটি বলে।
এরপর লড়াই চালিয়ে গেছেন টেইলর। জিমি নিশাম, কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমরা পারেননি লম্বা সময় সঙ্গ দিতে। ইনিংসের একমাত্র ছক্কায় যুজবেন্দ্র চেহেলকে গ্যালারিতে পাঠিয়ে টেইলর ফিফটি স্পর্শ করেন ৭৩ বলে।
মঙ্গলবারই খেলা হলে হয়তো শেষ দিকে ঝড় তুলতে পারতেন টেইলর। কিন্তু নতুন দিনে আর ছন্দ পাওয়ার সময় পাননি। নিউ জিল্যান্ডও তাই যেতে পারেনি আড়াইশ পর্যন্ত।
আগের দিনের একটির সঙ্গে এ দিন আরও দুই উইকেট নিয়ে ভারতের সফলতম বোলার ভুবনেশ্বর।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
নিউ জিল্যান্ড: ৫০ ওভারে ২৩৯/৮ (গাপটিল ১, নিকোলস ২৮, উইলিয়ামসন ৬৭, টেইলর ৭৪, নিশাম ১২, ডি গ্র্যান্ডহোম ১৬, ল্যাথাম ১০, স্যান্টনার ৯*, হেনরি ১, বোল্ট ৩*; ভুবনেশ্বর ১০-১-৩৪-৩, বুমরাহ ১০-১-৩৯-১, পান্ডিয়া ১০-০-৫৫-১, জাদেজা ১০-০-৩৪-১, চেহেল ১০-০-৬৩-১)।
ভারত: ৪৯.৩ ওভারে ২২১ ( রাহুল ১, রোহিত ১, কোহলি ১, পান্ত ৩২, কার্তিক ৬, পান্ডিয়া , ধোনি ৫০, জাদেজা ৭৭, ভুবনেশ্বর ০, চেহেল ৫, বুমরাহ ০*; বোল্ট ১০-২-৪২-২, হেনরি ১০-১-৩৭-৩, ফার্গুসন ১০-০-৪৩-১, ডি গ্রান্ডহোম ২-০-১৩-০, নিশাম , স্যান্টনার ১০-২-৩৪-২)।
ফল: নিউ জিল্যান্ড ১৮ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: ম্যাট হেনরি